Thursday 22 April 2010

মুক্তিযুদ্ধ ও আমাদের প্রাপ্তি

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাকিস্তান সামরিক আইনের অধীন অপারেশন সার্চ লাইট চালায়। এইরুপ মিলিটারী অপরাশেন ইন্দিরাগান্ধীও ১৯৮৪ সালের জুন অপারেশন ব্লু স্টার চালিয়েছিলেন তাতেও হাজারো সিভিলিয়ানকে হত্যা করা হয়। ভারতে এই জাতীয় আর্মি অপারেশন এখন চলছে, আমি বলিয়াছিলাম, পাকিস্তানী সামরিক প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তটি বা পরিকল্পনাটি ভুল ছিলো। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানী সেনা মোতায়েন যে বাংলাদেশের বৃদ্ধি হচ্ছে তা কারো অজানা ছিলো না। কাজেই এই পরিকল্পনা না করিলে, মানে ২৫মার্চের হত্যাযজ্ঞ না চালাইলে পাকিস্তানের ক্ষমতা পাঞ্জাবীদের হাত থেকে বাংগালীদের হাতে চলে আসতো। আর যেহেতু যুদ্ধ ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফলের না মানার জন্য শুরু হয়েছিলো, কাজেই যুদ্ধে বাংগালীরা জিতলে পুরো পাকিস্তানের নামই পরিবর্তন করে বাংলাদেশ হওয়া উচিত ছিলো। এর অর্থ পাকিস্তান নামটিই মানচিত্রে থাকার কথা নয়। আর তাই, ১৬ ডিসেম্বরের চুক্তির দিনে, বাংলাদেশের পক্ষ না থাকাটার মানে বাংগালীর মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেছিলো বিশ্ব-রাজনীতি। সেই চুক্তি ছিলো ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে, এবং কায়দা করে কোন দেশের পতাকাও রাখা হয়নি সেই চুক্তি সময়ে। আর আওয়ামী লীগ???? দেশে প্রায় ৭০ হাজার গ্রাম। প্রতি গ্রাম থেকে ৫ জন আওয়ামী সমর্থক সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করলে মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৫০হাজার হতো। অথচ সরাসরি মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা মাত্র ৭০ থেকে ৯০ হাজার। আওয়ামী লীগ ১৯৭২-৭৫ সালে মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট বিক্রি করে আর্থিক-ব্যবসা করেছে এবং এখনও রাজনৈতিক ব্যবসা করতে চাইছে।
রাজাকার ইস্যু নিয়ে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে চাইছে। আওয়ামী লীগের মুখোশটা খুলে দিতে চাইছি। আমি বলতে চাইছি,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৭০ থেকে ৯০ হাজার সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেছে, এরা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, এরাই প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি। সেই হিসাবে, ৬৮হাজার গ্রামের বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের ১ বা ২ টি পরিবার মুক্তিযুদ্ধের সাথে সরাসরি জড়িত, অন্যেরা নীরব/সরব সমর্থক ছিলেন, আবার অনেকেই ঢাকা সচিবলয়ে মাসিক বেতন নিয়েও চাকুরী করেছেন। কাজেই স্বাধীনতা স্বপক্ষ শক্তি ইত্যাদি বলে জাতিকে বিভক্ত রেখে আওয়ামী লিগ রাজনীতি করতে চাইছে, এটার মুখোশ খুলে ফেলতে হবে। এদের ৩য় পক্ষের এজেন্ডার মুখোশ খুলে পড়ছে এখন। হিসাব অনুযায়ী ৯৫ ভাগ অপরাধে পাকিস্তানি বাহিনি জড়িত। বাকি পাঁচ ভাগ অপরাধ করেছে রাজাকার, আল বদর ও আল শামস।

Sunday 11 April 2010

শেখ মুজিব স্বাধীনতা চেয়েছিলেন ?

বর্তমান সময়ের একটি আলোচনার বিষয় হল স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপারাধী। সকলের এখন একটাই প্রশ্ন, স্বাধীনতার বিরোধিতাকারি জামায়াত ইসলামি এই দেশে এখন রাজনীতি করার অধিকার চায় কেন? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদেরকে দেখতে হবে[su] স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মজিব কি চেয়েছিলেন?[/su]

১৯৬৯ সালের ১৪ই মার্চ শেখ মুজিব রাওয়াল পিন্ডি থেকে একটি গোল বৈঠক থেকে দেশে ফিরেন। সেখানে তিনি পান বিরোচিত সংবর্ধনা। বিমানবন্দরে তিনি ভাষন দেন। সেখানে তিনি বলেন, তাকে সমর্থন দিলে(রাজনৈতিক নেতাদের সমর্থন) তিনি আইয়ুব খানের কাছ থেকে এই দেশের জণ্য সায়ত্বশাসন দাবী করতেন। সেখানে তিনি মাওলানা ভাসাণীকে রাজণীতি থেকে অবসর গ্রহনের জন্য পরামর্শ দেন। (ক১)
শেখ মুজিবের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জনাব রেহমান সোবহান ২৫ শে মার্চ বিকাল ৫ টায় তার সাথে দেখা করেন। সেখানে মুজিব তাকে বলেন যে পাকিস্তানের সেনাবাহীনির উপর অভিযানের নির্দেশ এসেছে। এই পর্যায়ে সোবহান সাহেব তাকে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহনের অনুরোধ করেন। কিন্তু মুজিব জানান তিনি অপেক্ষা করছেন। সম্ভবত ইয়াহিয়া খান কোন আপোষ করার জণ্য ফোন করবেন। (ক২)

এই ব্যাপারে শেখ মুজিবের ঘনিষ্ট কামাল হোসেন বলেন:

" I waited for a telephone call throughout the fateful 25 march. The telephone call never came indeed when I finally took leave of Sheikh Muzib at about 10:30 pm on 25 th march, Sheikh Mujib asked me whether I had received such a call . I confirmed him that I had not " (খ১)

আসলে শেখ মুজিব সেই কালো রাত্রিতেও স্বাধীনতার কথা ভাবেননি। তিনি ২৭ তারিখে হরতালের কথা বলেছিলেন। (খ২)

শসস্ত্র সংগ্রামে শেখ মুজিবের তেমন কোন বিশ্বাস ছিল না। তিনি তার গুরু সোহরাওয়ার্দির মত নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন।(খ৩)

শেখ মুজিব গ্রেফতার হওয়ার পর এআ ব্যাপারে ইন্দিরা গান্ধী প্রশ্ন তোলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি এই ব্যাপারে প্রশ্ন করেন আপনাদের যুদ্ধের মুল কৌশলটা আমাকে বুঝিয়ে বলুন।আপনাদের সেনাপতি নিজে ধরা দিয়ে আপনাদের যুদ্ধ চালীয়ে যেতে বলছেন এটা আবার কি ধরনের কৌশল? জবাবে তখনকার নেতারা বলেছিল যে তিনি গৃহ ত্যাগ করেছে এবং সহসাই আমাদের সাথে মিলিত হবেন। তখন ইন্দিরা বলেছিল আপনারা ভুল বলচেন শেখ মুজিব স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছেন। এই কথা শুনে খন্দকার মোশতাক এবং তাজউদ্দিন নিরুত্তর হয়ে যান। (গ১)





ক২. রেহমান সেবহানের সাক্ষাতকার: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : ২য় খনড পৃ: ৩৯০
খ১: ডা: কামাল হোসেনের সাক্ষাতকার: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: ১৫শ খনড পৃ: ২৭৮
খ২: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : ২য় খনড পৃ: ৭৮৬
খ৩: ঢাকা আগরতলা মুজিব নগর, এম মোহাইমেন, পৃ: ৬৭
গ১: ঢাকা আগরতলা মুজিব নগর, এম মোহাইমেন, পৃ: ৬৪

Saturday 10 April 2010

শেখ মুজিব কোন পন্থি ছিলেন?

এই টপিকটা এখনকার তেমন কোন হিট টপিক না হলেও আমার মনে হল আপনাদের সাথে শেয়ার করা দারকার তাই করছি।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারত তোষন নীতি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ছে। অবস্থা দৃষ্টিতে মনে হচছে ভারতেরই কোন সরকার এটা। আওয়ামীলিগের রাজনৈতিক আদর্শ তাদের দলের এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিব। বরাবরই আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং শেখ মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা একটা কথাই বলে থাকেন যে বংগবন্ধুর স্বপ্ন। তাই ভাবলাম একটি আলোচনা করা দরকার ভারতের ব্যাপারে বংগবন্ধুর নীতি কি ছিল?

১০ই জানুয়ারী বংগবন্ধুর স্বদেশ প্রর্তাবর্তন দিবস। এইদিন বংগবন্ধু পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরেন। কিন্তু ১০ ই জানুয়ারী পর্যন্ত ব্রিটেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাহলে কেন বংগবন্ধু লন্ডন হয়ে ব্রিটিশ এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ আসলেন?? তিনি তো দিল্লি এয়ারলাইন্সেও আসতে পারতেন। এই দাবী দিল্লিরো ছিল। কারন কি? সেটা তার মুখ থেকেই শোনা যাক।

"বংগবন্ধু তার বন্ধু ভারত কে মনে মনে বিশ্বাস করতেন না। ভারত দাবী করেছিল তিনি যেন দিল্লি এয়ারলাইন্স হয়ে আসেন। তাদের দাবী আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ শেখ সাহেবকে জানান। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আমি ব্রিটিশ এয়ার লাইন্সই আসবো। কেন তিনি এই স্বিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা আমাদের অজানা। "

১৯৭১ সালে ২৮শে ডিসম্বার তিনজন সংখ্যা লঘু নেতা দিল্লি যান মিসেস গান্ধীর কাছে দেন দরবার করতে। তাদের আব্দার ছিল বাংলাদেশকে যেনো ভারতের একটা প্রদেশ করে নেওয়া হয়। এই তিনজন মহান দেশপ্রেমকি সেতা ছীলেন মনোরন্জন ধর, ফনিভুষন মজুমদার এবং চিত্তরন্জন সুতার। কিন্তু শেখ সাহেব সরা সরি এই খবরই প্রত্যাখ্যান করেন। এবং প্রচন্ড বিরোধীতা করেন।

বর্তমান সরকারের অন্যতম তরুন নক্ষত্র সোহেল তাজের দেশপ্রমিক পিতার মুজিব নগর সরকার কি করেছিলেন তা আরও ভয়ংকর। তারা দিল্লির সাথে একটি গোপন চুক্তি করেন। কিন্তু শেখ মুজিব দেশে ফিরেই এই চুক্তি প্রত্যাখান করেন।শেখ মুজিব চুক্তির সকল অংশ প্রত্যাখান করে বললেন এই চুক্তি আমি মানিনা। তিনি এর সব স্বিদ্ধান্ত বাতিল করে দিলেন। অবিলম্বে দেশ থেকে সকল ভারতীয় কর্মকর্তা কর্মচারীকে বের হয়ে যাওয়ার আদেশ দিলেন।সিমান্তের তিন মাইলের মধ্যে অবাধ বানিজ্যের চুক্তি বাতিল করলেন। ভারতে পরামর্শ অনুযায়ী সেনাবাহিনী একিভুত কারা স্বীদ্ধান্ত প্রত্যাখান করলেন। এবং সেনা বাহিণী শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিলেন। এই ব্যাপারে মন্ত্রী সভার বৈঠকে তীব্র বাক বিতন্ডা হল। তাজউদ্দিনের নেতৃত্বে একপক্ষ তার সেনাবাহীনির রাখার স্বিদ্ধান্তে বিরক্ত হল। শেখ সাহেব জানালেন তিনি পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সামরিক অফিসারদের দেশে ফেরাবার উদ্যোগ নেবেন। এতে ভারতীয় সেনাবাহিণী বিরক্ত হয়ে প্রতাশ্যে বিবৃতিও দেয়া শুরু করল।

শেখ সাহেবের সবচেয়ে দেশ প্রেমক ময় কাজ করলেন মিসেস গান্ধির সাথে বৈঠকে। ফেব্রুয়ারীর শেষের দিকে সামরিক নায়কদের নিয়ে গান্ধী বৈঠকে বসেছিলেন শেখ সাহেব কে নিয়ে সেখানে তিনি সরাসরি দাবী করলেন কবে আপনি বাংলাদেশ থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করছেন? শুনে মিসেস গান্ধী খুবই বিরকত্ হয়ে মানেক শর দিকে তাকালেন। তারপর বললেন আপনি যেদিন বলবেন সেদিনই

শেখ সাহেব স্বিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে যাবেন। এই ব্যপারে ইনডিয়ার পরামর্শে তাজউদ্দিন পন্থিরা তাকে পরামর্শ দেয় সেই সম্মেলনে না যাওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি স্পষ্ট বলেন আমি লাহোর যাব এবং সম্মেলনে যোগ দিয়ে সদস্য পদ নেব। দেখি কে কি করে। এই ব্যাপারে একজন মন্তব্য করে শেক সাহেব বেশি বেড়েছে। এর জবাবে তিনি বলেন সবে তো শুরু দেখেন আমি কি করি।